জ্বর হলে করণীয় (২০২৫)

 জ্বর কোনো রোগ নয়, বরং অন্য রোগের লক্ষণ। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদির দ্বারা আক্রান্ত হলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। জীবাণুর হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করার জন্য শরীরে প্রকৃতিপ্রদত্ত এটি একটি প্রতিরোধক দেয়াল। জ্বর হলে অনেক নিয়ম মানা হয়, যা পুরোপুরি ঠিক নয়।

স্রান ও গা মুছে দেওয়া

অনেকের ধারণা, জ্বর হলে স্রান করা যাবে না। এটি ভুল ধারণা। জ্বর হলে কুসুম গরম জল দিয়ে স্রান করলে তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি শরীর চনমনে হয়। ২৭ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার জল দিয়ে স্রান করা ভালো।

অতিরিক্ত ঠান্ডা জল দিয়ে স্রান করা ঠিক হবে না। এতে ত্বকের নিচে রক্তজালিকা সংকুচিত হয়ে যায়। কাঁপুনি শুরু হয়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত গরম জল দিয়ে স্রান করাও জ্বরের সময় অনুচিত।

স্রানের বিকল্প হতে পারে ভেজা গামছা বা তোয়ালে দিয়ে সারা শরীর মুছে দেওয়া। এ ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে হবে কুসুম গরম জল।

জলপট্টি ও বরফের ব্যবহার

জ্বরের সময় কপালে জলপট্টি দেওয়ার প্রচলন আছে। তবে তাপমাত্রা অত্যন্ত বেড়ে গেলে এর পরিবর্তে বগলের নিচে বা কুঁচকিতে বরফ ব্যবহার করা যেতে পারে। এসব স্থানে রক্তনালিগুলো অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত। ফলে ঠান্ডা প্রয়োগ করলে দ্রুত শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করবে। বরফের খণ্ড গামছা বা কাপড়ে পেঁচিয়ে উল্লিখিত স্থানে কিছুক্ষণ চেপে রাখলে দ্রুত তাপমাত্রা কমে যাবে। ১০-১৫ মিনিট এগুলো রাখা যেতে পারে।

এই সময় জ্বর হলে কী খাবেন

খাবার ও পোশাক

জ্বর হলে তরল পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। বেশি খাবার একসঙ্গে খাওয়ানো উচিত নয়। কেননা, এটি শরীরের তাপ উৎপাদন বৃদ্ধি করবে। বদহজম হতে পারে। এ সময় সুতি কাপড়ের জামা পরা দরকার, যাতে ভেতর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হয়। দরজা-জানালা খুলে দেবেন, পাখা ছেড়ে দেবেন, যাতে বাতাস চলাচল করে।

এখন জ্বর হলে কী করবেনঘুম ও বিশ্রাম

পর্যাপ্ত ঘুম বা বিশ্রাম এ সময় খুবই প্রয়োজন। রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাপনাকে সক্রিয় রাখতে কমপক্ষে আট ঘণ্টা রাতের ঘুম প্রয়োজন। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী দিনেও বিশ্রাম দরকার।

জল পান

জ্বর হলে জলশূন্যতার আশঙ্কা বেড়ে যায়। শরীরের তাপমাত্রা যত বেশি হবে, জলশূন্যতার আশঙ্কা তত বাড়বে। এ ছাড়া জ্বরের সময় ক্ষুধামান্দ্য ও বমি—এ দুটি জলশূন্যতার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়। জলশূন্যতার কারণে মাংসপেশিতে চিবানো বা ব্যথা শুরু হতে পারে। রক্তচাপ ও প্রস্রাব কমে যেতে পারে

হাঁচি-কাশি, জ্বর লেগেই থাকে, করণীয় কী?

মনে রাখুন

জ্বর তিন দিনের বেশি স্থায়ী হলে; অত্যধিক মাত্রায় জ্বর হলে কিংবা তীব্র মাথাব্যথা,
খিঁচুনি, অস্বাভাবিক আচরণ, শ্বাসকষ্ট, ক্রমাগত বমি ও তীব্র পেটব্যথা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Comments